শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১১

আকর্ষনীয় পদ্ধতিতে কুরআন মশক

ওয়াক্ফের বিবরণ ও উহার চিহ্ন
১। ( ০ - ه) আয়াত শেষ হইলে উক্তরুপ একটি চিহ্ন দেওয়া হয়। ইহাকে ‘ওয়াকফে তাম’ বলে। সুতরাং চিহ্নিত স্থানে ওয়াক্ফ করিতে হইবে। কিন্তু ওয়াকফে তামের উপর অন্য কোন চিহ্ন থাকিলে যেমন-  م-ط-ج-ز-ص-لا- তবে এই  চিহ্ন অনুযায়ীই ওয়াকফ করিতে হইবে।
২। ( ﻣ) -এই চিহ্ন কে ‘ ওয়াকফে লাযেম’ বলে। এই ﻣ চিহ্নিত স্থানে ওয়াকফ না করিলে বিপরীত অর্থ হইয়া যাইতে পারে। তাই ওয়াকফ করা অবশ্যই দরকার।
৩।  ط - এই চিহ্ন কে ‘ওয়াকফে মতলাক্ব’ বলে । এই চিহ্নিত স্থানের ওয়াকফ করা উত্তম, ওয়াক্ফ নাকরা ভাল নহে।
য়াকফ করা না করা উভয় জায়েজ, তবে ওয়াক্ফ করা ভাল।
৫। ز এই চিহ্ন কে ‘ওয়াক্ফে মুজাওয়ায’ বলে। এইরূপ স্থানে ওয়াকফ করা না করা উভয় জায়েজ, তবে, না করা ভাল।
৬। ص - এই চিহ্ন কে ‘ওয়াকফে মুরাখ্খাস’ বলে। এই রুপ স্থানে ওয়াক্ফ না করিয়া পরের শব্দের সহিত মিলাইয়া পড়া ভাল। কিন্তু নিঃশ্বাস শেষ হইয়া গেলে ওয়াক্ফ করা যায়।
৭। قف - এই চিহ্নকে ‘ওয়াক্ফে আমর’ বলে। ইহা ওয়াক্ফ করার জন্য নির্দেশ করে।
৮। ق - ইহাকে ‘ক্বিলা আলাইহি ওয়াক্ফুন বলে। অর্থ্যাৎ কেহ ওয়াক্ফ
করিতে বলেন আবার কেহ না করিতে বলেন। তবে ওয়াক্ফ না করা ভাল।
৯। لا - ইহাকে  ‘লা ওয়াক্ফা আলাইহি ’ বলে এই لا  চিহ্নিত স্থানে ওয়াকফ না করার হুকুম।
১০। صل - ইহাকে ‘কাদ ইউসালু’ অর্থ্যাৎ কোন কোন সময় উহাতে ওয়াক্ফ করা হয়।
১১। ﺼﻠﮯ ইহাকে ইহাকে ‘ওয়াসলে আওলা’ বলে। এইরূপ স্থানে মিলাইয়া পড়া উত্তম। ওয়াক্ফ করিলেও ক্ষতি নাই।
১২। سكته - ইহার নাম ‘সাকতাহ’ এ স্থানে স্বর ভঙ্গ করিতে হয়। নিঃস্বাস ভঙ্গ করিতে হয় না। ( এই চিহ্ন কোরআন শরীফে ৮ জায়গায় আছে)।
১৩। وقفة - এ স্থানে সাকতার ন্যায় এমন ভাবে পাঠ করিবে যেন ওয়াকফের অধিক নিকট বর্তী হয়। শ্বাস ছাড়িবে না।
১৪। ...  এই চিহ্ন ‘মু’আনাকা’ বলা হয়। এই চিহ্ন শব্দ বা বাক্যের ডানে ও বামে দুই পার্শ্বে আসে। পড়িবার সময় প্রথম জায়গায় ওয়াক্ফ করিলে দ্বিতীয় স্থানে মিলাইয়া পড়িতে হয়। কিংবা দ্বিতীয় স্থানে ওয়াক্ফ করিলে প্রথম স্থানে মিলাইয়া পড়িতে হয়। অর্থ্যাৎ যে কোন এক স্থানে মিলাইয়া পড়িতে হইবে।
     মোতাকদ্দেমীনদের নিকট হাশিয়অতে মু’আনাকার পরিচয় এরূপ “ مع” চিহ্ন দ্বারা ১৬ জায়গায় এবং মোতাআখখেরীনদের নিকট এরূপ “معانقه” চিহ্ন দ্বারা ১৮ জায়গায় বর্ণনা করা হইয়াছে।
وقف النبى صلى الله عليه وسلم -এখানে ওয়াক্ফ করা অতি উত্তম।
وقف غفران - এখানে ওয়াক্ফ করিলে গুনাহ মাফ হয়।
وقف جبريل  - এ স্থানে ওয়াক্ফ করা বরকত পূর্ণ।
হাশিয়ার রুকু চিহ্ন “ ع”  হরফের উপরে নীচে ও মধ্যে যে নম্বর দেওয়া আছে, ইহার উপরেরটি সুরার
রুকুর সংখ্যা, নীচেরটি পারার রুকুর সংখ্যা এবং মধ্যেরটি দুই রুকুর মধ্যবর্তী আয়াতের সংখ্যা।
পূর্ণ কোরআন শরীফে৭টি মঞ্জিল,১১৪টি সুরা আছে, উহাতে ১৪টি সাজদা (ওয়াজেব) এবং ৫৫৮টি রুকু
আছে।
>>>>>>>>>০<<<<<<<<<<


বিসমিহী তা’য়ালা
কুরআন শরীফ তিলায়াতের প্রচলিত ভুলসমূহ
১. হরফের মধ্যে
ক্রঃনং    যা হওয়ার    যা না হওয়ার
(ক)    ز “য” এর মত নরম হবে,    “ঝ” এর মত শক্ত নয়।
(খ)    ض অনেকটা “জ” এর মত হবে,    “দ” এর মত নয়।
(গ)    و শুরু ও শেষে ঠোট গোল হবে এবং মাদ্দ করে পড়তে হবে।   
২. সিফাতের মধ্যে-
(ক)    ض এর استطا لت  এর প্রতি খেয়াল করা হয় না।   
(খ)    ص س ز এর সেফাত আদায় হয় না।   
(গ)    অবশ্য যের অবস্থায়  استعلاء কম হওয়া জরুরী।    حروف مستعليه  এর মধ্যেকার উচ্চারণ করে  যা ভুল।
৩. হরকাতের মধ্যে
(ক)    زبر এ আকার(া)এর উচ্চারণ হবে।    যফলা (্য) এর মত টেড়া উচ্চারণ ভুল।
(খ)    زبر কে দবিয়ে উচ্চারণ করতে হয়,    “”েএর উচ্চারণ ভুল।
(গ)    ﭘﯾﺶ উভয় ঠোট মিলার কাছাকাছি হবে,    “ে া” এর উচ্চারণ ভুল।
৪. হরফেলীন
(ক)    মা’রুপ পড়তে হয়     সুতারাং كيف  (কায়ফা) কে কায়ফা, لو  (লাউ)কে লাও পড়া ভুল
(খ)    নরম করে পড়তে হয়,     ঝটকা দেওয়া ভুল
(গ)    তাড়াতাড়ী পড়তে হয়    মাদ্দ কর ভুল
৫. মাদ্দের ব্যাপারে
(ক)    এক আলিফ এ দুই হরকাত পরিমান টান হবে    বেশী টানা ভুল
(খ)        তিন, চার বা পাঁচ আলিফ মাদ্দের আওয়াজে তরঙ্গ সৃষ্টি করবে না।
    মাদ্দে মুত্তাছিল ও মুনফাছিলের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট হবে।     আওয়াজ নাকে নিবে না

৬. গুন্নাহ ও ইখফা
(ক)    উভয়টার পরিমাণ এক আলিফ, ইখফা অনেকটা বাংলা অনুস্বর(ং) এর মত এবং গুন্নাহ “ন্ন” এর মত    অনেকে ব্যতিক্রম করে থাকে, যা ভুল।
৭. ক্বলক্বলাহ্
সামান্য ধাক্কা দিয়ে পড়তে হয়, অবশ্য এসব অক্ষরে তাশদীদ থাকলে ওয়াক্ফকালে অক্ষর টি দুবার উচ্চারিত হয়।      বেশী ধাক্কা দেওয়া ভুল,
সাধারণ ক্বলক্বলার ন্যায় একবার উচ্চারণ করা ভুল
৮. ওয়াক্ফ এর অবস্থায়
(ক)    ر পরিস্কার শুনা যাবে,     অধিকাংশেরই ر শুনা যায় না
(খ)    ه সাফ হয় করতে হবে    অনেকেরই ه সাফ হয় না, আবার কেউ কেউ শকত্ত করে উচ্চারণ করে তাও ভুল।
(গ)     বরাং নরম হামযার মত হয়।    ت  এর উপর ওয়াক্ফ এর সময় অনেকে‘ ه  এর মত আওয়াজ বের করে যা ভুল
(ঘ)    غ দাবিয়ে উচ্চারণ করতে হয়     বেশী দাবানো ভুল
(ঙ)     ر কে মাখরাজের মধ্যে সামান্য দেরী করে উচ্চারণ করবে, যাতে উভয় ر  উচ্চারণ হতে পারে।     তাশদীদ যুক্ত ر কে ওয়াকফের সময় অনেকে একটি ر উচ্চারণ করে যা ভুল;
(চ)    ي  মুশাদ্দাদ উচ্চারণে নরম করে, দু হরফ উচ্চারণ পরিমাণ সময় নিয়ে আদায় করতে হবে।    ي মুশাদ্দাদ উচ্চারণে অনেকে “জ” এর মত আওয়াজ করে যা ভুল
৯. লাহনে জ্বলী
অনেকে ء কে ي কে এবং يকে ء উচ্চারণ করে যা লাহনে জলী, যেমন- من ثلثى الليل - شانئك هو الابتر প্রথমটিতে ي কে ء এবং দ্বিতীয়টিতে ء  কে ي উচ্চারণ করা ভুল।
১০. হুরুফে মাকত্বআত
এর মধ্যে অনেকে তাজবীদের ইখফা, গুন্নাহ, ক্বলক্বলাহ্ ইত্যাদি কায়িদা জারী করে না। যেমন- كهيعص উল্লেখ্য অনেকে নিরবে কিরাআত পড়ার সময় তাজবীদের কায়িদা জারি করে না। এ কারণে জুহরের নামাযে কিরাআত লম্বা হওয়া সত্ত্বেও ৪/৫ মিনিটে শেষ হয়ে যায়, যা মারাত্মক ভুল। কারণ তাজবীদ তিলায়াতের হক। চাই তিলায়াত নিরবে করা হোক বা আওয়াজ করে করা হোক ।

>>>>>>>>>০<<<<<<<<<<


মাখরাজের আলোচনা
হরফের উচ্চারণের  স্থানকে মাখরাজ বলে।
আরবী হরফ মোট ২৯টি, মাখরাজ ১৭টি।
এই ১৭টি মাখরাজ ৫ স্থানে অবস্থিত।
(ক) কন্ঠনালী, (খ) জিহ্বা, (গ) উভয় ঠোঁট, (ঘ) নাকের বাঁশি, (ঙ)মুখের খালি জায়গা।
কন্ঠনালী ৩টি মাখরাজে ৬টি হরফ
১। কন্ঠনালীর শুরু হইতে          ء- ه     উচ্চারণ হয়।
২। কন্ঠনালীর মধ্যখান হইতে     ع-ح    উচ্চারণ হয়।
৩। কন্ঠনালীর শেষ হইতে   غ- خ    উচ্চারণ হয়।
জিহ্বা  হইতে১০টি মাখরাজে ১৮টি হরফ ।
৪।  (১)জিহ্বার গোড়া তার বরাবর উপরের তালুর সাথে লাগাইয়া ق  উচ্চারণ হয়।
৫। (২)জিহ্বার গোড়া থেকে একটু আগে বাড়িয়ে তার বরাবর উপরের তালূতে লাগিয়ে  ك  উচ্চারণ হয়।
৬। (৩) জিহ্বার মধ্যখান তার বরাবর উপরের তালুতে লাগিয়ে ج ش ي উচ্চারণ হয়।
দাতের নাম ঃ
সামনের হরফগুলির সম্পর্ক যেহেতু দাঁতের সাথে এ জন্য দাঁতের নাম জানা দরকার। পূর্ণ বয়সের একজন মানুসের দুই পাটিতে মোট ৩২টি দাঁত আছে। উপরে নিচে একটি করে চার কোনায় চারটি কে  نواجذ  বলে। এরপর তিনটি করে ১২টি طواحن, এর পরে ১টি করে ৪টিضواحك  , এর পরে ১টি করে ৪টি    انياب, এরপর ১টি করে ৪টি  رباعيات , এর পর সামনে ২টি করে ৪টি ثنايا  , উপরে নীচে মিলিয়ে মোট ৩২ টি দাঁত আছে।

    জেনে রাখা দরকার যে উপরের দাঁতগুলিকে عليا  এবং নীচের দাঁতগুলিকে  سفلى বলে। নীচের দাঁতের মধ্য হতে শুধু মাত্র ছানায়ার দু’টি দাঁত মাখরাজে প্রয়োজন হয়।


৭। (৪) نواجذ  - طواحن - ضواحك - এর মোট ২০টি দাঁতকে  اضراس  বলে।   اضراس  উলিয়ার এর গোড়া এবং জিহ্বার গোড়ার কিনারা, উভয় পাশ থেকে বা এক পাশ থেকে ض উচ্চারিত হয়। ض এর ক্ষেত্রে ১টি কাজ করণীয়, তাহলো জিহ্বার গোড়া উপরের দিকে উঠে যাবে, এবং মাঝখান তালুর সাথে মিশে যাবে। আর একটি কাজ বর্জনীয়, তা হলো জিহ্বার আগা  ذ এবং ظ এবং মাখরাজ থেকে পৃথক রাখতে হবে।
৮। (৫)  ضاحك - ناب - رباعى- ثنايا এই ৪ দাঁতের সংলগ্ন তালু এবং জিহ্বার আগার কিনারা থেকে  ل  উচ্চারণ হয়।
৯। (৬)- ناب - رباعى - ثناياদাঁতের সংলগ্ন তালু এবং জিহ্বার আগার কিনারা থেকে ن উচ্চারণ হয়।
১০। (৭) - رباعى - ثناياদাঁতের সংলগ্ন তাুল এবং জিহ্বার আগার পিঠ থেকেر  উচ্চারিত হয়।
১১। (৮) ছানায় উলিয়া  দাঁতের গোড়া এবং জিহ্বার আগা থেকে  ط د ت উচ্চারিত হয়।
১২। (৯) ছানায় উলিয়া দাঁতের আগা এবং জিহ্বার আগা থেকে  ظ ذ ث  উচ্চারিত হয়।
১৩। (১০) জিহ্বার আগা ছানায়া ছুফলা দাঁতের আগা এবং ছানায়া উলিয়া দাঁতের সাহায্যেص س ز  উচ্চারিত হয়।

উভয় ঠৈাঁটে ২টি মাখরাজে ৪টি হরফ অবস্থিত।
১৪। (১) ছানায়া উলিয়া দাঁতের আগা এবং নীচের ঠোঁটের পেট থেকে  ف  উচ্চারিত হয়।
১৫ (২) উভয় ঠোঁটের ভিজা অংশ থেকে ب এবং শুকনা অংশ থেকে  م , এবং উভয় ঠোঁট গোল করে মধ্যে একটু ফাঁকা রেখে و উচ্চারিত হয়।
১৬। (৩) নাকের বাঁশি থেকে গুন্নাহ আদায় হয়। 
১৭।  মুখের খালি জায়গা থেকে মদ্দ উচ্চারিত হয়। 

>>>>>>>>>০<<<<<<<<<<


সিফাতের আলোচনা
হরফের উচ্চারণ ভঙ্গিকে সিফাত বলে।
সিফাত ২ প্রকারঃ ১।صفت لازمه   ২।  صفت عارضه
সিফাতে لازمه ঐ সিফাতকে বলে যে হরফের জন্যে যে নির্দিষ্ট সিফাত রয়েছে, সেই সিফাত অনুযায়ী হরফটি আদায় না করলে হরফ হরফই বাকি থাকেনা বা হরফটি ত্র“টিপূর্ণ হয়ে যায়। যেমন- ط - ت । ط এর মধ্যে ১টি সিফাত রয়েছে পুর, যদি ط পুর না করা হয়, তাহলে ط  হরফটি ت হয়ে যায়।
د এর মধ্যে একটি সিফাত রয়েছে, فلقله যদি ক্বলক্বলা  না করা হয়, তাহলে ত্র“টিপূর্ণ হয়ে যায়।
সিফাতে عارضه ঐ সিফাতকে বলে যে হরফের জন্যে যে নির্দিষ্ট সিফাত রয়েছে ঐ সিফাত অনুযায়ী আদায় না করলে, হরফটি বাকি থাকে, কিন্তু হরফের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। যেমন ن  ও م হরফে তাশদিদ হলে গুন্নাহ করে পড়তে হয়। যদি গুন্নাহর সিফাত আদায় না করা হয় তবে নুন ঠিক থাকবে, কিন্তু শুধুমাত্র গুন্নার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে।
صفت لازمه এর প্রকার ভেদ
 صفت لازمه দুই প্রকার ঃ
(১) صفت لازمه متضادة  (২) صفت لازمه غير متضادة
(১) متضادة  বলা হয়, যার বিপরীতে অন্য একটি সিফাত থাকে।



صفت متضادة  মোট পাঁচ জোড়ায় ১০টি।
প্রথম জোড়ার নাম (১) همس  (২) جهر
১। প্রথম জোড়ার আলোচ্য বিষয় শ্বাস জারি থাকা ও শ্বাস বন্ধ হওয়া।
ক) همس  সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় তার মাখরাজে আস্তে ধাক্কা লাগার কারণে শ্বাস জারি থাকে এবং আওয়াজ ছোট হয়। ইহার হরফ ১০টি ঃ فحثه شخص سكت
খ) جهر  সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় তার মাখরাজ জোরে ধাক্কা লাগার কারণে শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় এবং আওয়াজ বড় হয়। همس  এর ১০টি হরফ বাদে বাকি ১৯টি জাহারের হরফ।
২। দ্বিতীয় জোড়ার নাম  ঃ شدت  - رخوت - توسط ।
২য় জোড়ার আলোচ্য বিষয় আওয়াজ বন্ধ হওয়া আওয়াজ জারি থাকা ও আওয়াজ মাধ্যম পর্যায়ে হওয়া। ঃ
ক) شدت  সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় তার মাখরাজে শক্তভাবে ধাক্কা লাগার কারণে আওয়াজ ব›ন্ধ হয়ে যায়, এবং আওয়াজ শক্ত হয়। ইহার হরফ ৮টি ঃ اجدك قطبت ।
খ) رخوت  সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় তার মাখরাজ সহজে ধাক্কা লাগার কারণে আওয়াজ জারী থাকে এবং আওয়াজ নরম হয়।  ইহার হরফ شدت  এবং توسط  এর ১৩টি বাদে বাকী ১৬টি।
গ) توسط সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় شدت এর মত আওয়াজ বন্ধ হবেনা, আবার رخوت এর মত আওয়াজ জারী ও থাকবেনা, বরং মধ্যম হবে, ইহার হরফ ৫টি।  لن عمر ।


৩য় জোড়ার নাম (১) استعلاء  (২)استفال
৩য় জোড়ার আলোচ্য বিষয় পুর, বারিক।
ক) استعلاء  সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় জিহবার গোড়া উপরের তালুর দিকে উঠার কারণে হরফগুলি মোটা হয়, ইহার হরফ ৭টি ঃ خص ضغط قظ ।
খ) استفال  সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় জিহবার গোড়া নীচের দিকে চেপে থাকার কারণে হরফগুলি বারীক হয়, ইহার হরফ استعلاء এর ৭টি হরফ বাদে বাকী ২২টি।

চতুর্থ জোড়ার নাম (১) اطباق (২)انفتاح ।
চতুর্থ জোড়ার আলোচ্য বিষয় জিহবার মধ্যখান উপরের তালুর সঙ্গে লাগা বা না লাগা।
ক)اطباق সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় জিহবার মধ্যস্থান উপরে তালুর সাথে লেগে যাবে, ইহার হরফ ৪টিঃ  ص ض ط ظ ।
খ) انفتاح সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় জিহবার মধ্যখান নীচের দিকে চেপে রেখে মুখখুলে আদায় করতে হবে, ইহার হরফ اطباق এর ৪টি হরফ বাদে বাকী ২৫টি।

পঁঞ্চম জোড়ার নাম ঃ (১) اذلاق (২) اصمات ।
৫ম জোড়ার আলোচ্য বিষয় জলদীভাবে আদায় করা বা ধীর স্থীর ভাবে আদায় করা।
ক) اذلاق  সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় জিহবা এবং ঠোটের কিনারা দ্বারা সহজে ও তাড়াতাড়ি আদায় হয়। ইহার হরফ ৬টি ঃ فر من لب ।
খ) اصمات সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় নিজ মাখরাজ থেকে ধীর স্থির এবং মজবুতির সাথে আদায় হয়, ইহার হরফ اذلاق এর  হরফ বাদে বাকী ২৩টি।

সিফাতে غير متضادة এর বর্ণনা ঃ
صفت غير متضادة বলা হয় যার বিপরীতে অন্য কোন সিফাত থাকে না, ইহা মোট ৭টি।
(১)  صفير ঃ এই সিফাতের হরফগুলি আদায় করার সময় চড়–ই পাখি বা বাঁশির আওয়াজের ন্যায় বেজে উঠে, ইহার হরফ ৩টি ঃ  ص س ز ।
(২)  قلقله ঃ এই সিফাতের হরফগুলি সাকিন অবস্থায় আদায় করার সময় তার মাখরাজে শক্ত ভাবে ধাক্কা লাগার কারণে যে অতিরিক্ত আওয়াজ হয় উহাকে قلقله বলে। ইহার হরফ ৫টি।  قطب جد
(৩)  لين ঃ واو  বা  يا সাকিন হয়ে ডানে যবর হলে এ দু’টিকে লীনের হরফ বলে, লীনের হরফ নরম ভাবে আদায় হয়, যেমন- بيت - خوف ।
(৪) انحراف ঃ এই সিফাতের হরফ দু’টি ر- ل ইনহিরাফ এর অর্থ ঝুকে যাওয়া, অর্থাৎইন্হিরাফ সিফাতের হরফ আদায় করার সময় لام হরফটি را এর মাখরাজের দিকে এবং را হরফটি لام এর মাখরাজের দিকে ঝুকে পড়ে, কাজেই অতিরিক্ত ঝুকলে ر হরফটি لام এবং لام হরফটি ر হয়ে যাবে, সুতরাং অতিরিক্ত ঝুকা থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

(৫)تكرار ঃ এই সিফাতের হরফ ১টি ر এই  ر হরফটি আদায় করার সময়জিহ্বার মাথা কেঁপে উঠে যার কারণে ১টি রা এর পরিবর্তে কয়েকটি রা হতে চায় এই জন্য অতিরিক্ত (কম্পন) থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

(৬) تفشى ঃ এই সিফাতের হরফ ১টি ش এই ش হরফটি আদায় করার সময় মুখের ভেতরে শা, শা শব্দ ছড়িয়ে পড়বে।

(৭) استطالت ঃ এর অর্থ লম্বা করা  استطالت সিফাতের হরফ ১টি  ض এই  ض হরফটি আদায় করার সময় তার মাখরাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়াজ জারি রেখে আদায় করতে হয়।

>>>>>>>>>০<<<<<<<<<<


-ঃ হরকত ও তানভীন ঃ-
হরকত ঃ
যবর, যের ও পেশকে হরকত বলে। যেমন-   َ     ِ    ُ
তানভীন ঃ
দুই যবর, দুই যের, দুই পেশ কে তানভীন বলে। যেমন -

ن   নুন ছাকিন বা  ً  ٍ   ُ তানভীন এর বিবরণ ঃ
নুন ছাকিন বা তানভীনকে চার নিয়মে পড়তে হয়, যথা ঃ ১। ইয্হার, ২। ক্বল্ব ৩। ইদ্গাম, ৪। ইখ্ফা।
১। ইযহার ঃ ইযহারের অর্থ আওয়াজকে ছাফ করিয়া পড়া, ইযহারের হরুফ ছয়টি, যথা ঃ ء ه ح خ ع غ  এই ছয়টি হরুফের কোন একটি হরফ নুন ছাকিন বা তানভীনের পরে আসলে  ن নুন ছাকিন বা  ً  ٍ   ُ তানভীনকে ইযহার করিয়া পড়তে হয়। ن  নুন ছাকিন এর পরে যেমন. اَنْعَمْتَ  এবং  ً  ٍ   ُ তানভীন এর পরে যেমন. عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ
২। ক্বল্ব ঃ ক্বলবের অর্থ বদলিয়া পড়া, ক্বলবের হরফ একটি ب (বা) এই হরফ  نনুন ছাকিন বা  ً  ٍ   ُ তানভীন এর পরে অন্য শব্দে আসিলে  ن নুন ছাকিন এর পরে যেমন  مِنْ بَعْدِ ً  ٍ   ُ  তানভীনের পরে যেমন. يََوْمئذ بجهنم
৩। ইদগাম ঃ ইদগাম অর্থ মিলিয়ে পড়া ।
ইদগাম দুই প্রকার ঃ (১) ইদগামে বাগুন্নাহ, (২) ইদগামে বেগুন্নাহ
ইদগামে বাগুন্নাহর হুরুফ চারটি ى و ز ن  এই চার হুরুফের কোন একটি হরফ نনুন ছাকিন বা  ً  ٍ   ُ তানভীন এর পরে অন্যে শব্দে আসলে ن নুন ছাকিন বা  ً  ٍ   ُ তানভীন কে গুন্নাহর সহিত মিলিয়ে পড়তে হয। ن  ছাকিন এর পরে যেমন। ان يضرب  ।  

ً  ٍ   ُ তানভীন  এর পরে যেমন- حطت نغفر لكم। ইদাগামের বেগুন্নাহর হুরুফ দুইটি ر - ل এই হরফের কোন একটি نনুন ছাকিন বা  ً  ٍ   ُ তানভীন এর পরে অন্য শব্দে আসলে نনুন ছাকিন বা  ً  ٍ   ُ তানভীন কে গুন্নাহ চাড়া মিলিয়ে পড়তে হয়। ن  ছাকিন এর পরে যেমন -  من ربهم ً  ٍ   ُ তানভীন  এর পরে যেমন- هدى للمتقين।
৪। ইখফা ঃ ইখফার অর্থ নাকের বাঁশিতে আওয়াজ কে লুকিয়ে পড়া। ইখফার হুরুফ ১৫টি যথা ঃ  ت ث ج د ذ ز س ش ص ض ط ظ ف ق ك-  এই ১৫ হুরুফের কোন একটি হরফ ن নুন ছাকিন বা  ً  ٍ   ُ তানভীন এর পরে আসলে ن নুন ছাকিন বা  ً  ٍ   ُ তানভীন  গুন্নাহর সাথে ইখফা করে পড়তে হয়।  ن এর পরে যেমন - فانذرتكم।  ً  ٍ   ُ তানভীন  এর পরে যেমন- خيرا كثيرا

ওয়াজিব গুন্নার বিবরণ ঃ
গুন্নাহ অর্থ আওয়াজকে নাকের বাঁশিতে নিয়ে পড়া। ওয়াজিব গুন্নাহর হরফ দুইটি م মীম ও ن নুন। এই দুইটি হরফের উপর তাশদীদ আসলে مমীম এবং ن নুনকে গুন্নাহ করে পড়ে হয়। م মুশাদ্দাদ যেমন।  ثم -  ان ।
]
গুন্নাহ মোট চার প্রকার ঃ
 (১) ক্বলব গুন্নাহ (২) ইদগামে বাগুন্নাহ (৩) ইখফা গুন্নাহ (৪) ওয়াজিব গুন্নাহ।


م মীম ছাকিনের বিবরণ
م মীম ছাকিনকে তিন নিয়মে পড়তে হয় যথাঃ ১) ইখফায়ে শাফাবী ২) ইদগামে শাফাবী ৩) ইযহারে শাফাবী
১) ইখফায়ে শাফাবী ঃ م মীম ছাকিনের পরে ب বা আসিলে উক্ত মীম ছাকিনকে গুন্নাহর সাথে ইখফা করে পড়তে হয়। যেমন-قم باذن الله ।

২) ইদগামে শাফাবী ঃ- م মীম ছাকিন এর পরে م মীম আসিলে উক্ত মীম ছাকিনকে ইদগাম করে পড়তে হয়, যেমন - عليهم مطر

৩) ইযহারে শাফাবী ঃ م মীম ছাকিন এর পরে ب বা এবং মীম ছাড়া অন্য কোন হরফ আসিলে উক্ত মীম ছাকিনকে ইযহার করে পড়তে হয়। যেমন- هم فيها ।

নোট ঃ م  মীম হরফটি ঠোট হতে উচ্চারিত হয় তাই মীম ছাকিনের কায়দার সহিত ঠোটের আরবি শব্দকে মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। আরবিতে ঠোটকে (شفة) শাফাতুন বলা হয়। তাই এই শব্দ হতেবল হয়েছে। ) ইখফায়ে শাফাবী ২) ইদগামে শাফাবী ৩) ইযহারে শাফাবী ।
মদের বিবরণ
মদের অর্থ আওয়াজকে টেনে পড়া, মদের হুরুফ তিনটি  ا و ى  নিম্ন বর্ণিত শর্ত অনুযায়ী এই তিন হুরুফে মদ হয় যথা ঃ
 ا(আলিফ)খালি ডাইনে (যবর)  َ   و (ওয়াও) ছাকিন ডাইনে (পেশ) ُ  ي (ইয়া) ছাকিন ডাইনে যের ِ  আসলে আওয়াজকে টেনে পড়তে হয়। এমনি ভাবে    খাড়া যবর     খাড়া যের এবং      উল্টা পেশে ও মদ হয়।


মদ অনেক প্রকার। নিম্নে সাত প্রকার মদের বিবরণ দেয়া হল ঃ
১) মদ্দে আছলী ২) মদ্দে মুত্তাছিল ৩) মদ্দে মুনফাছিল ৪) মদ্দে আরযী ৫)মদ্দে লীন ৬) মদ্দে বদল ৭) মদ্দে লাযেম।

১) মদ্দে আছলী ঃ মদের হরফের পর হামযা অথবা ছাকিন না আসলে তাকে মদ্দে আছলী বলে। ইহাকে এক আলিফ লম্বা করিয়া পড়তে হয়। যেমন-  نو حيها ।
২) মদ্দে মুত্তাছিল ঃ মদের হরফের পরে একই শব্দে হামযা আসিলে তাহাকে মদ্দে মুত্তাছিল বলে। ইহাকে চার আলিফ লম্বা করিয়া পড়তে হয। যেমন ঃ  اولئك ।
৩) মদ্দে মুনফাছিল ঃ মদের হরফের পরের শব্দে হামযা আসিলে তাহাকে মদ্দে মুনফাছিল বলে। ইহাকে চার আলিফ লম্বা করিয়া পড়তে হয়। যেমন انا اعطيناك ।
৪)  মদ্দে আরেযী ঃ মদের হরফের পরে ছাকিনে আরযী আসিলে তাহাকে মদ্দে আরযী বলে। ইহাকে তিন আলিফ মন্বা করিয়া পড়তে হয়। যেমন-  تعلمون।
৫) মদ্দে লীন ঃ و  (ওয়াও) ছাকিন বা ي (ইয়া) ছাকিন ডাইনে َ যবর আসিলে তাহাকে হরফে লীন বলে। হরফে লীনের পরে ছাকিনে আরযী আসিলে তাহাকে মদ্দে লীন বলে। ইহাকে দুই আলিফ লম্বা করিয়া পড়িতে হয়, যেমন -  بيت- خيف - سيد ।
৬) মদ্দে বদল ঃ মদের হরফের পূর্বে হামযা আসিলে তাহাকে মদ্দে বদল বলে। ইহাকে এক আলিফ লম্বা করিয়া পড়তে হয়,
যেমন-- ء - ء - ء  । ايمانا -

৭) মদ্দে লাযেম ঃ হরফে মদের পরে ছাকিনে আছলী আসিলে তাহাকে মদ্দে লাযেম বলে। ইহা চার আলিফ লম্বা করিয়া পড়তে হয় । যেমন -  دابة ।

নোট ঃ যে ছাকিন সব সময় এক অবস্থায় থাকে তাহাকে ছাকিনে আছলী বলে। ইহা দুই প্রকার ঃ (১) আশদীদ যুক্ত ছাকিন (২) যযম যুক্ত ছাকিন।


মদ্দে লাযেমের প্রকারভেদ ঃ
মদ্দে লাযেম ৪ প্রকার যথা ঃ
১।  মদ্দে লাযেম কালমী মুসাক্কাল ঃ যদি শব্দের মধ্যে তাশদীদযুক্ত সাকিন আসে তবে তাহাকে মদ্দে লাযেম কালমী মুসাক্কাল বলে। ইহাকেও চার আলিফ লম্বা করিয়া পড়িতে হয়। যেমন- تامرونى
২) মদ্দে লাযেম কালমী মুখাফ্ফাফ  ঃ যদি শব্দের মধ্যে যযমযুক্ত ছাকিন আসে তবে তাহাকে মদ্দে লাযেম কালমী মুখাফ্ফাফ বলে। ইহাকে চার আলিফ লম্বা করিয়া  পড়তে হয। যেমন-  الئن ।
৩। মদ্দে লাযেম হরফী মুসাক্কাল ঃ যদি হরফের মধ্যে  তাশদীদ যুক্ত ছাকিন আসে তবে তাহাকে মদ্দে লাযেম হরফী মুসাক্কাল বলে। ইহাকে চার আলিফ লম্বা করিয়া পড়িতে হয়। যেমন- الم
৪। মদ্দে লাযেম হরফী মুখাফ্ফাফ ঃ যদি হরফের মধ্যে জযম যুক্ত ছাকিন আসে তবে তাহাকে মদ্দে লাযেম হরফী মুখাফ্ফাফ বলে। ইহাকে চার আলিফ লম্বা করিয়া পড়িতে হয়। যেমন - ص   ।


আল্লাহ রাব্বুলল আ’লামীন পবিত্র কালামের মধ্যে ঘোষনা করেন ঃ
وَأَن لَّيْسَ لِلْإِنسَانِ إِلَّا مَا سَعَى
অর্থ্যাৎ ঃ আর মানুষ যাহা চেষ্টা করে তাহই পায়। সুতরাং ইলমে দ্বীন অর্জন করিবার জন্য সাধ্যনুযায়ী চেষ্টা করিতে হইবে। হযরত শায়েখ সাদী (রঃ) কি সুন্দর করিয়া বলেছেন ঃ বাংলা উচ্চারণ- চুঁশামা আয পায় ইল্ম বাইয়াদ গোদাখ্ত। কেবে ইলম না তুঁয়া খোদা রা শেনাখত। অর্থাৎ - ইল্মে দ্বীন অর্জন করা জন্য তুমি মুমবাতির ন্যায় বিগলিত হয়ে যাও। কারণ ইলম ছাড়া খোদার পরিচয় লাভ করা যায় না। তাই ছাত্ররা ওস্তাদের সামনে নিজেদের আগ্রহ উদ্দীপনা ও পরিশ্রম দেখাবে। তাহলে ওস্তাদগন দয়া পরবশ হয়ে অধিক মনেযোগ দিবেন এবং বেশী মেহনত করে শিক্ষা করাবেন।
এ সম্পর্কে অন্য কবি বলেন ঃ অর্থ্যাৎ- পরিশ্রম অনুযায়ী উৎকর্ষ লাভ হয়। সুতরাং যে উৎকর্ষ লাভ করিতে আগ্রহী সে যেন বিনিদ্র রজনী যাপন করে। আশ্চয়ের কথা! তুমি মর্যাদা লাভ করিতে চাও। অথচ রাত্রিতে নিদ্রায় বিভোর। তুমি কি জান না? ডুবুরী মুক্তার সন্ধানে সমুদ্রের তলদেশে ডুব দেয়। পরিশ্রম অনুযায়ী তুমি যা ইচ্ছা কর, অর্জন করিতে পারবে। আর যিনি উদ্দেশ্য স্থলে পৌছিতে চায় তিনি শৈশবেই সে জন্যে অকান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টা আরম্ব করে।


সকাল সন্ধার আমল
১। যে ব্যক্তি ফজর ও মাগরিব নামাযের পর সুরা হাসরের শেষ ৩ আয়াত আউযু বিল্লাহীচ্ছামীঈল আলিমি মিনাশ শাইত্বনির রজীম তিন বার পাঠ করে। হাসরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করবে। তাহার জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা দোয়া ও মাগফিরাত করবে। এবং ঐ দিনে বা রাত্রে ইন্তেকাল করলে শহীদি মৃত্যু নসীব হইবে।
২। যে ব্যক্তি এই আয়াত খানা সাতবার পাঠ করবে, সকাল-সন্ধা আল্লাহ তা’য়ালা তাহার দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় চিন্তা ফিকির দুর করে দিবেন। এবং দুনিয়া ও আখরাতের সমস্ত সমস্যা সমাধান করবেন।
সুরা তাওবার শেষ আয়াত ৭ বার পাঠ করবেন।
حسبى الله لا اله الا هو عليه تو كلت وهو رب العرش العظيم-
৩। যে ব্যক্তি এই দো’য়া চারবার পাঠ করবেন, তাহার জন্য আল্লাহ তা’য়ালা কঠিন কঠিন চার টা রোগ থেকে মুক্ত করবেন। যেমন- অন্ধ, পাগল, কুষ্ঠ ও পারালাইসিস দো’য়াটি ৪ বার পাঠ করবেন।
سنحن الله العظيم وبحمده ولا حول ولاقوة الابالله
 ৪। যে ব্যক্তি ফজর ও মাগরিব নামাযের পর কথা-বার্তা না বলে এই দো’য়া সাতবার পাঠ করবে। সে ঐ রাত্র বা দিনে যদি মারা যায়, তবে দোয়খ থেকে নাজাত পাবে। দো’য়াটি ৭ বার পড়বে।  اللهم اجرنى من انار হে আল্লাহ আমাকে দোযখের আগুন হইতে রক্ষা কর।


৫। যে ব্যক্তি খানা  খাইয়া এই দু’য়া পাঠ করবে তাহার পুর্বাপর সমস্ত গুনাহ মাফ হইয়া যাইবে। এই দু’য়াটি একবার পাঠ করবেন।  الحمد لله الذى اطعمنى هذاالطعام ورزقنيه من عير حول منى ولا قوة -
৬। যে ব্যক্তি অযুর শেষে এই কালিমা পাঠ করবে, তাহার জন্য বেহেস্তের আটটি দরজা খোলা থাকিবে । সে যে দরজা দিয়া ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারিবে।
এই কালিমা অযুর শেষে পাঠ করবেন।
اشهد ان لا اله الا الله وحده لا شريك له واشهدان محمدا عبده ورسوله-
৭। যে ব্যক্তি প্রতিদিন তিনবার আল্লাহর নিকট জান্নাতের প্রার্থনা করবে, জান্নাত তার জন্য আল্লাহর নিকট এই দো’য়া করবে যে, হে আল্লাহ এই ব্যক্তিকে জান্নাতে দাখিল করুন।
দু’য়াটি  ৩ বার পড়বে। اللهم انى اسئلك الجنة- 
আর যে ব্যক্তি প্রতি দিন তিনবার জাহান্নাম থেকে পানাহ চাইবে, তো জাহান্নাম তার জন্য আল্লাহর নিকট এই দু’য়া করবে যে, হে আল্লাহ এই ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে পানাহ দিন। দু’য়াটি  তিন বার পড়বে। اللهم اجرنى من النار -
৮। হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেন যে, যে ব্যক্তি এই কালিমা পড়িবে তাহার জন্য বিশ লাখ নেকী লেখা হইবে। 
কালিমাটি এই -  لا اله الا الله وحده لا شريك له احد صمدا لم يلد ولم يولد ولم يكن له كفوا احد -

৯। হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেন যে ব্যক্তি জুমার দিন আছর নামায বাদ নিজ স্থানে বসে এই দুরুদ শরিফ ৮০ বার পাঠ করবে, আল্লাহ তা’য়ালা তাহার আমলনামায় ৮০ বৎসরের ইবাদাত বন্দেগীর সাওয়াব দান করবেন এবং তাহার আমলনামায় ৮০ বৎসরের গুনাহ মাফ করিয়ে দিবেন। দুরুদ শরিফটি এই।
اللهم صل على محمدن النبى الامى وعلى اله وسلم تسليما-
১০। যে ব্যাক্তি সকালে এই দু’য়া পড়িবে একটি, গোলাম আযাদ করার ছাওয়াব পাইবে, দশটি নেকী পাইবে, দশটি গুনাহ মাফ হইবে এবং আখেরাতে দশটি দারাজাত বুলন্দ হইবে বৈকালে পড়িলে তদ্রুপই ফল মিলিবে।
لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شئ قدير-
মেধা শক্তি বৃদ্ধির উপায়
১। বর্ণিত আছে যদি তুমি চাও যে, তোমার পঠিত একটি অক্ষর ও ভুলবে না, তবে সর্বদা পড়া আরম্ব করার সময় এই দো’য়াটি পড়ে লও। ( ৭বার)
اللهم افتح علينا حكمتك وانشر علينا رحمتك ياذا الجلال والاكرام -
২। যদি তুমি বেশি পরিমানে স্মরণশক্তি লাভ করতে চাও তবে প্রত্যেক ফরজ নামাযের পরে দো’য়াটি পড়ে লও। (১বার)
امنت بالله الواحد الحق لاشريكله وكفرت بماسواه
৩। প্রত্যাহ  একশত বার পড়বে, (কেউ কেউ বলেছেন যে, এই দরুদের মধ্যে ইলমে লাদুন্নীর ফয়েজ আছে। ইহা আমল অজানা জিনিস ও অনেক সময় বুঝে আসে।
اللهم صل على سيدنا محمدن النبى الامى واله وسلم

৪। আয়াত খানা প্রতিদিন ২১ বার পাঠ করবে।
رب اشرح لى صدرى ويسرلى امرى واحلل عقدة من لسانى يفقهو قولى -
৫। পড়া আরম্ভ করার সময় নিম্ন লিখিত আয়াত খানা তিনবার পাঠ করবে।
سبحنك لا علم لنا الا ما علمتنا انك انت العلميم الحكيم-
৬। প্রত্যেক ওয়াক্ত নামায আদায়ের পর এই আয়াতখানা ১১বার পড়বে।
رَبِ زِدْنِىْ عِلْمًا
৭। ফজর ও মাগরিবের নামায বাদ প্রতিদিন এই আয়াত কয়খানা ৭বার করে পাঠ করবে বিসমিল্লাহ সহ।
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ - خَلَقَ الْإِنسَانَ مِنْ عَلَقٍ- اقْرَأْ َرَبّكَالْأَكْرَم
الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ - عَلَّمَ الْإِنسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ   ড়



৮। প্রত্যেক নামাযের পর এই আয়াত কয়খানা ১১বার পড়বে বিসমিল্লাহ সহ
الرَّحْمَن - عَلَّمَ الْقرْآنَ  - خَلَقَ الْإِنسَانَ - عَلَّمَه الْبَيَانَ
৯। পড়া আরম্ব করার সময় নিম্নের দো’য়াটি তিন বার পাঠ করে লইবে
رب يسر ولا تعسر وتمم علينا بالخير
১০। যদি পার তবে শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদের নামায আদায় করে হক্কানী আলেম হওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করবে।
১১। উপকারী ইলমের জন্য এই দো’য়া পড়িবে।
اللهم انى اسئلك علما نافعا ورزقاواسعا-  وشفعاء من كل داء -

১২। হেফজ মজবুত করার আমল সমূহ সমস্ত গোনাহ ও আল্লাহ পাকের নাফারমানী  থেকে বেঁচে থাকা, বিশেষ করে চোখ, কান, মুখ, হাত, পা দ্বারা কোন গোনাহ না করা।
১৩। প্রত্যেক নামাজের পরে কপালের উপরে হাত রেখে   يا قوى ১১ বার পাঠ করা।
১৪। প্রতিদিন সকালে কিসমিস ও মধু খাওয়া দুপুরে খাওয়ার পরে কায়লুলা করা, বিকালে ব্যায়াম ও জায়েয খেলাধুলা করা।
১৫। সর্বদা ওযু করার পূবে মেসওয়াক করা ও ঘুমানেরা আগে ও পরে মেসওয়াক করা বা দাত পরিস্কার করা।
১৬। তেলায়াত শুরু করার আগে, আউজু বিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ এবং এস্তেগফার ও দরুদ শরীফ পাঠ করা।
১৭।  رب زدنى علما বেশী বেশী করে পড়তে থাকা।
১৮।  তাহাজ্জুদ এর নামাজ আদায় করা ও রোনাজারি করা।
১৯। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বা জামাত আদায় করা এবং নামাজ শেষে তাছবীহে ফাতেমী (৩৩ বার سبحن الله  ৩৩ বার الحمد لله ৩৪ বারالله اكبر ) আদায় করা বা পাঠ করা।
২০। পড়া আরম্ভ করার আগে  ৩বার পাঠ করবে।
سبْحَانَكَ لاَ عِلْمَ لَنَا إِلاَّ مَا عَلَّمْتَنَا إِنَّكَ أَنتَ الْعَلِيم الْحَكِيم


>>>>>>>>>০<<<<<<<<<<


নামাজের ওয়াজিব ১৪টি
১। আলহামদু শরীফ পুরা পড়া। ২। আলহাদু সঙ্গে সুরা মিলান।
৩ ।রুকু সেজদায় দেরী করা। ৪। রুকু হইতে সোজা হইয়া খাঁড়া হইয়া দেরী করা। ৫। দুই সেজদার মাঝখানে সোজা হইয়া বসিয়া দেরী করা।
৬। দরমিয়ানী বৈঠক করা। ৭।দোন বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়া।
৮। ইমামের জন্য কেরাত আস্তে এবং জোরে পড়া।
৯। বিতরের নামাযে দোয়ায়ে কুনুত পড়া।১০। দোন ঈদের নামাযে ছয় ছয় তাকবির বলা। ১১। প্রত্যেক ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকাতকে ক্বেরাতের জন্য নির্ধারিত করা। ২২। প্রত্যেক ফরয নামাযের তারতীব ঠিক রাখা। ১৩। প্রত্যেক রাকাতের ওয়াজিব গুলির তারতীব ঠিক রাখা।
১৪। আচ্চালামু আলাইকুম বলিয়া নামায শেষ করা।

নামাযে সুন্নাতে মুয়াক্বাদাহ ১২টি
১।দুই হাত উঠান। ২। দুই হাত বাঁধা। ৩। সানা পড়া। ৪। আউজু বিল্লাহ পড়া। ৫। বিসমিল্লাহ পড়া। ৬। প্রত্যেক উঠা বসায় আল্লাহু আকবার বলা।
৭। রুকুর তাসবীহ বলা। ৮। আলহামদুর পর আমীন বলা।
৯। রুকু হইতে উঠীবার সময় সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ, রব্বানা লাকাল হামদু বলা। ১০। সেজদার তাসবীহ বলা। ১১। দরুদ শরীফ পড়া।
১২। দোয়ায়ে মাসুরা পড়া ।
নামাযের বাহিরে এবং ভিতরে ১৩ ফরজ
নামাযের বাহিরে ৭ ফরজ
১। শরীর পাক ।  ২। কাপড় পাক। ৩। নামাযের জায়গা পাক।
৪। ছতর ঢাকা। ৫। কেবলা মুখী হওয়া। ৬। ওয়াক্ত মত নামায পড়া।
৭। নামাযের নিয়াত করা।
নামাযের ভিতরে ৬ ফরজ
১ । তাকবীরে তাহরীমা বলা। ২ ।খাড়া হইয়া নামায পড়া।
৩। ক্বেরাত পড়া। ৪। রুকু করা। ৫। দুই সেজদা করা।
৬। আখেরী বৈঠক করা।

নামায বঙ্গের কারণ ১৯টিঃ
১। নামাযে অশুদ্ধ পড়া। ২। নামাযের ভিতর কথা বলা।
৩। কোন লোককে সালাম দেওয়া। ৪। সালামের উত্তর দেওয়া ।
৫। উহ! আহ! শব্দ করা। ৬। বিনা ওজরে কাশা। ৭। আমলে কাছীর করা। ৮। বিপদে কি বেদনায় শব্দ করা। ৯। তিন তাসবীহ পরিমাণ ছতর খুলিয়া থাকা। ১০। মুক্তাদী ব্যতীত অপর ব্যক্তীর লোকমা লওয়া। ১১। সুসংবাদ ও দুঃসংবাদে  উত্তর দেওয়া। ১২। নাপাক জায়গায় সেজদা করা। ১৩। ক্বেবলা দিক হইতে সিনা ঘুরিয়া যাওয়া। ১৪। নামাযে কোরআন শরিফ দেখিয়া পড়া। ১৫। নামাযে শব্দ করিয়া হাসা। ১৬। নামাযে সাংসারিক কোন বিষয় প্রার্থনা করা। ১৭। হাঁচির উত্তর দেওয়া। ১৮। নামাযে খাওয়া ও পান করা।
১৯। ইমামের আগে মুক্তাদী দাঁড়ান।

অজুতে ৪ ফরজ
১ ।সমস্ত মুখ ধোয়া। ২। দোন হাতের কনুইসহ ধোয়া। ৩। মাথা মাসেহ করা। ৪। দোন পায়ের টাখনুসহ ধৈায়া।

গোসলের ৩ ফরজ
১। কুলি করা। ২। নাকে পানি দেওয়া। ৩। সমস্ত শরীর ধৌত করা।

অজু ভঙ্গের কারণ ৭টিঃ
১। পায়খানা-পেশাবের রাস্তা দিয়া কোন কিছু বাহির হওয়া।
২। মুখ ভরিয়া বমি হওয়া। ৩। শরীরের কোন জায়গা হইতে রক্ত, পুঁজ, পানি বাহির হইয়া গড়াইয়া পড়া।৪। থুতুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া। ৫। চিত বা কাত হইয়া হেলান দিয়া ঘুম যাওয়া।
৬। পাগল, মাতাল ও অচেতন হইলে । ৭।নামাযে উচ্চ স্বরে হাসিলে।


তায়াম্মুমে ৩ ফরজ
১। নিয়ত করা। ২। সমস্ত মুখ একবার মাসেহ করা।
৩। দোন হাতের কনুই সহ একবার মাসেহ করা।

নামাযের শুরু হইতে শেষ পর্যন্ত ৫১টি সুন্নাত
ক্বিয়ামে ১১টি সুন্নাত ঃ

১। তাকবীরে তাহরিমার সময় সোজা হয়ে দাঁড়ানো অর্থাৎ মাথা নিচু না করা। ২। দুই পায়ের মাঝখানে ৪ আঙ্গুল ফাঁকা রাখা। ৩। মুকতাদীর তাকবীরে তাহরিমা ইমামের তাকবীরে তাহরিমার সংগে হওয়া। ৪।তাকবীরে তাহরিমার সময় দুই হাত কান পর্যন্ত উঠানো। ৫। হাতের তালু ক্বিবলার দিকে রাখা। ৬। আঙ্গুলগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় রাখা অর্থাৎ বেশি খুলে অথবা বেশি বন্ধ করে না রাখা। ৭। ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠের উপরে রাখা। ৮। কনিষ্ঠ আঙ্গুল বাজুর উপরে রাখা। ৯।মাঝের ৩ আঙ্গুল বাজুর উপরে রাখা। ১০। নাভির নিচে হাত বাঁধা । ১১। ছানা পড়া।

 কেরাতে ৭টি সুন্নাত ঃ

১। আউজু বিল্লাহ পড়া। ২। বিসমিল্লাহ পড়া। ৩। আমিন আস্তে বলা।
৪। ফজর এবং যোহরে তেওয়াতে মুফাচ্ছাল পড়া অর্থাৎ সুরায়ে হুজুরাত থেকে বুরুজ পর্যন্ত, আসর এবং এশা আওছাতে মুফাচ্ছাল অর্থাৎ সূরা বুরুজ থেকে বাইয়্যেনাহ পর্যন্ত, এবং মাগরিবে ক্বেছারে মোফাচ্ছাল অর্থাৎ সুরা ঝিলঝাল  থেকে নাস পর্যন্ত পড়া। ৫। ফজরের প্রথম রাকাত লম্বা করা। ৬। খুব তাড়াতাড়ি এবং খুব ধীরে ধীরে না পড়া বরং মধ্যম পড়া।
৭। ফরজের তৃতীয় এবং চতুর্থ রাকাতে শুধু সূরা ফাতেহা পড়া।

রুকুর সুন্নাত ৮টি ঃ
১। রুকুর তাকবীর বলা। ২। রুকুর ভিতরে দুই হাত দিয়ে হাটু  ধরা।
৩। হাটু ধরার সময় আঙ্গুল খুলিয়া রাখা। ৪। পায়ের পেন্ডলী সোজা রাখা।
৫। পিঠ বিছাইয়া দেওয়া। ৬।মাথা এবং পাছা সমান রাখা।
৭। রুকুর ভিতরে কমপক্ষে তিনবার سبحان ربى العظيم বলা।
৮।রুকু থেকে উঠার সময় ইমাম سميع الله لمن حمده  এবং মুক্তাদী ربنا لك الحمد এবং মুনফারেদ উভয়টা বলা।
সিজদার সুন্নাত ১২টি ঃ
১। সিজদার তাকবীর বলা। ২।সিজদার ভিতরে প্রথমে হাটু রাখা।
৩। পুনরায় দুই হাত রাখা। ৪। পুনরায় নাক রাখা। ৫। কপাল রাখা।
৫। দুই হাতের মাঝখানে সিজদা করা। ৬। সিজদার সময় পেট এবং রান আলাদা রাখা। ৭। বাহু থেকে বাজু আলাদা রাখা। ৮। কনুই মাটি থেকে আলাদা রাখা। ৯। সিজদার ভিতরে কমপক্ষে তিনবার سبحان ربى الا على বলা। ১০। সিজদা থেকে ওঠার  তাকবীর বলা। ১১। সিজাদ থেকে ওঠার সময় প্রথমে কপাল, তারপর নাক, তারপর হাত, শেষে হাটু উঠানো এবং দুই সিজদার মাঝখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসা।

কুঞ্চদার ১৩ সুন্নাত ঃ
১। ডান পা খাড়া রাখিয়া বাম পা বিছাইয়া বসা এবং আঙ্গুল কিবলার দিকে রাখা। ২। দুই হাত রানের উপরে রাখা। ৩। তাশাহুদের ভিতরে  اشهد ان لا اله  বলার পর শাহাদত আঙ্গুল  ওঠানো এবং الا الله এর শুরুতে নামানো। ৪। শেষ বৈঠকে দুরুদ শরীফ পড়া। ৫। দুরুদ শরীফের পরে দোয়ায়ে মাছুরা পড়া। ৬। দুই দিকে সালাম ফিরানো ৭। সাাম ডান দিক থেকে শরু করা। ৮। ইমাম; মুকতাদী, ফিরিশতা এবং নেককার জ্বিনের নিয়্যত করা। ৯। মুকতাদী ইমাম, ফিরিশতা, নেককার জ্বিন এবং ডান-বামের মুকতাদীদের নিয়্যত করা। ১০। মুনফারেদ শুধু ফিরিশতার নিয়্যত করবে। ১১। মুকতাদী ইমামের সাথে সাথে সালাম ফিরাবে। ১২। দ্বিতীয় সালামের আওয়াজ প্রথম সালামের আওয়াজের চেয়ে আস্তে করা। ১৩। রুকুর মধ্যে আঙ্গুল খোলা থাকবে এবং ১৩। সিজদার মধ্যে মিলানো থাকবে।


সহজে কুরআন হিফয করার বিশেষ আমল ঃ

        একবার হযরত আলী (রাঃ) নবীজীর দরবারে এসে আরয করলেন ইয়া রাসূলুাল্লাহ! আমার মাত-পিতা আপনার প্রতি কুরবান হোক। আমি কুরআনের যতটুকু পড়ি তা মনে থাকে না, ভুলে যাই। উত্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন।
         হে আলী! আমি তোমাকে এমন একটি আমল শিক্ষা দিব যা আমল করলে তুমি যাই পাঠ কর তা ভুলবে না, সব তোমার হৃদয়পটে অংকিত হয়ে থাকবে। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম ইরশাদ করেন। বৃহঃবার দিবাগত রাত্রে শেষাংশে উঠে চার রাকাত নামায পড়বে। শেষ রাত্রে দোয়া কবুল হওয়ার সময়। শেষ রাত্রে না উঠতে পারলে প্রথমাংশে পড়লেও হবে। চার রাকাত নামাযের প্রথম রাকাতে সুরা ইয়াসিন পড়বে, দ্বিতীয় রাকাতে সুরা দুখান পড়বে, তৃতীয় রাকাতে সুরা আলীফ লাম মীম সিজদাহ পড়বে। আর চতুর্থ রাকাতে সুরা মুলক পড়বে।
নামাযান্তে দীর্ঘক্ষন আল্লাহ তা’য়ালার হামদ ও ছানা পাঠ করব্ েরাসুলের প্রতি দুরুদ ও সালাম পাঠ করবে, দু’য়ার মধ্যে সমগ্র মুসলিম জাতিকে শামিল করব্ েআর নিজের অতীত আত্মীয়ের জন্য দু’য়া করবে। এর পর নিম্মোক্ত দু’য়া পাঠ করবে।

হযরত আী (রাঃ) কে শিখানো দু’আ
اللهم ارحمنى بترك المعاصى ابداماابقيتنى وارحمنى ان اتكلف مالا يعنينى وارزقنى حسن النظر فيما يرضيك عنى اللهم بديع السموات والارض ذاالجلال والاكرام والعزة التى لاترام اسئلك يا الله يارحمن بجلالك ونور وجهك ان تلزم قلبى حفظ كتابك كما علمتني وارزقنى ان اقرأه علي نحو الذى يرضيك عنى اللهم بديع السموت والارض ذاالجلال والاكرام والعزة التى لاترام اسئلك يا الله يا رحمن بحلالك ونور وجهك ان تنور بكتابك بصرى وان تطلق به لسانني ان تفرج به عن قلبى وان تشرح به صدرى وان تغسل به بدنى فانه لا يعيننى على الحق غيرك ولا يؤتيه الا انت ولا حول ولا قوة الا بالله العلى العظيم ড়
        অতএব রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন হে আলী! এই আমল তিন, পাঁচ বা সাত জুমআ পর্যন্ত পড়বে। ইনশা আল্লাহ দু’আ অবশ্যই কবুল হবে। তিনি আর ও বলেন ঐ জাতের শপথ! যিনি আমাকে নবী হিসাবে পাঠিয়েছেন। যেকোন ও মুমিন বান্দাহ এ দু’য়া করবে তার দু’য়া বৃথা যাবে না।
        হযরত ইবেন আব্বাস (রাঃ) বলেন পাঁচ বা সাত জুমআ যেতেই আলী (রাঃ) রাসুলের দরবারে এসে আরয করলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ! প্রথমে আমি ৪ আয়াত পড়লে ও মনে রাখতে পারতাম না, এখন ৪০ আয়াত পড়লে ও এমন মুখস্ত হয়, যেন দেখে পড়ছি। হাদীস শ্রবন করে বলার সময ভুলে যেতাম, এখন বলার সময় একটা অক্ষরও এদিক সে দিক হয় না।              (ফাযায়েলে কুরআন ও মুনাজাতে মাকবুল) ।
>>>>>>>>>০<<<<<<<<<